স্বদেশ ডেস্ক:
করোনা মহামারীর দীর্ঘ দুই বছর পর বিধি-নিষেধমুক্ত হচ্ছে বিদেশ ভ্রমণ। সংক্রমণ ও মৃত্যুহার কমে আসায় বাংলাদেশ থেকে বিদেশ ভ্রমণে বিধি-নিষেধ প্রায় তুলে নেওয়া হচ্ছে। এখন থেকে বিমানবন্দরে আরটি পিসিআর টেস্টের বাধ্যবাধকতা থাকছে না। দুই ডোজ টিকা নিলেই যে কেউ উড়োজাহাজে ভ্রমণ করতে পারবেন। এ ছাড়া ভারতে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসায় দেশটির সঙ্গে যুক্ত সব বন্দর খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। করোনার বিধি-নিষেধ পর্যালোচনায় অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে। আজকালের ভেতর এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
গত ডিসেম্বরে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় নতুন করে কড়াকড়ি আরোপ করে বিভিন্ন দেশ। আরটি পিসিআর টেস্ট বাধ্যতামূলক, দুই ডোজ করোনা টিকা নেওয়াসহ নানা বিধি-নিষেধে বিদেশ ভ্রমণ প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসায় আবার বিধি-নিষেধ তুলে নিচ্ছে প্রায় প্রতিটি দেশ। সম্প্রতি ভ্রমণের ক্ষেত্রে আরটি পিসিআর টেস্টের নেগেটিভ সনদের বাধ্যবাধকতা তুলে নিয়েছে যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের প্রায় সব দেশ। এ ছাড়া ভারত, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, মালদ্বীপ, নেপাল বিধি-নিষেধ তুলে নিয়েছে। ভারতের সঙ্গে দীর্ঘদিন সীমান্ত প্রায় বন্ধ। দুই দেশে করোনা সংক্রমণ কমে আসায় প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে সীমান্ত উন্মুক্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গত রবিবার রাতে করোনা বিধি-নিষেধ পর্যালোচনায় আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হয়। বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, বেবিচকসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের প্রতিনিধিরা ছিলেন। সূত্র জানায়, ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত বৈঠকে দেশের করোনার বর্তমান পরিস্থিতি ও বিশ^ব্যাপী বিভিন্ন দেশ বিধি-নিষেধ যে তুলে নিচ্ছে সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। সার্বিক দিক বিবেচনায় বাংলাদেশে প্রবেশ ও বহির্গমনে করোনার নেগেটিভ সনদের বাধ্যবাধকতা প্রত্যাহারের প্রস্তাব আসে। বৈঠকে সবাই এতে সম্মতি জানান।
এ ছাড়া বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত দুই ডোজ করোনা টিকা নেওয়া থাকলে যে কেউ বাংলাদেশে প্রবেশ ও বহির্গমন করতে পারবেন। এ ছাড়া করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্তে বিমানবন্দরে স্বয়ংক্রিয় আধুনিক প্রযুক্তি স্থাপনেরও প্রস্তাব আসে। এতে যাত্রী হয়রানি কমবে বলে জানানো হয়।
ভারতের সঙ্গে সীমান্ত খোলার বিষয়ে শিগগিরই সিদ্ধান্ত আসবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। তিনি বলেন, দুই দেশের সংক্রমণের হার যেভাবে কমছে তাতে আমরা যাতায়াত আরও সহজ করতে পারব বলে আশা করছি। দুই দেশের ট্যুরিস্টসহ স্টুডেন্টদের যাতায়াত সহজ করা হবে।
বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান আমাদের সময়কে বলেন, এখন থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ ও বহির্গমনে আরটি পিসিআর নেগেটিভ সনদ লাগবে না, যদি কোনো দেশের বিশেষ চাহিদা না থাকে। আশা করি দুই-একদিনের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করা সম্ভব হবে। করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্তে আধুনিক প্রযুক্তি স্থাপন হলে বিমানবন্দরে নেমে যাত্রীদের দীর্ঘ সময় নষ্ট হবে না। যাত্রী হয়রানিও কমবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ বিষয়ে কাজ করবে।